
বিশ্বদীপ ব্যানার্জি: হিন্দু পুরাণে মকরকে গঙ্গাদেবীর বাহন কল্পনা করা হয়েছে। ফলে মকর সংক্রান্তি’র দিন গঙ্গাস্নানের ধুম লেগে যায়। এ উপলক্ষ্যে গঙ্গাসাগর মেলা নামক বিরাট এক মেলা বসে দক্ষিণ ২৪ পরগণার অন্তর্গত সাগরদ্বীপের কপিল মুনির আশ্রমকে কেন্দ্র করে। ভাগবত পুরাণ এবং মহাভারত অনুযায়ী কপিল মুনি বিষ্ণুর অন্যতম অবতার এবং ব্রহ্মার পৌত্র মনুর বংশধর। ভগীরথের পিতামহ অংশুমানকে মর্ত্যে গঙ্গা আনয়নের বিধান তিনিই দিয়েছিলেন।
আরও পড়ুন: মকর সংক্রান্তির দিন ছেলে শনির বাড়িতে বেড়াতে আসেন বাবা সূর্য
তবে শুধু গঙ্গাসাগর মেলা নয়। মকর সংক্রান্তি বিখ্যাত আরও একটি মেলার জন্য। বিখ্যাত কুম্ভমেলা-ও কখনও কখনও এই সময়ে হয়ে থাকে।২০১৯ সালের কুম্ভমেলায় মকর সংক্রান্তির দিন প্রয়াগে রেকর্ডসংখ্যক মানুষের মানুষের সমাগম ঘটে। সাধারণ কুম্ভ ৪ বছর অন্তর। ৬ বছর পরপর অর্ধকুম্ভ। ১২ বছর পরপর পূর্ণকুম্ভ। এবং ১২ টি পূর্ণকুম্ভে অর্থাৎ ১৪৪ বছর অন্তর মহাকুম্ভ।
কিন্তু একটাই নির্দিষ্ট জায়গায় নয়। মেলার স্থান ঠিক হয় সূর্য এবং বৃহস্পতির অবস্থান অনুসারে। সূর্য এবং বৃহস্পতি সিংহ রাশিতে থাকলে নাসিকের ত্র্যম্বকেশ্বরে, সূর্য মেষ রাশিতে থাকলে হরিদ্বারে, বৃহস্পতি বৃষ রাশিতে এবং সূর্য কুম্ভ রাশিতে থাকলে প্রয়াগে, এবং সূর্য বৃশ্চিক রাশিতে থাকলে উজ্জয়িনীতে বসে মেলা। কথিত, এক কুম্ভ-স্নানেই নাকি লক্ষবার পৃথিবী প্রদক্ষিণের ফল মেলে।
খাস খবর ফেসবুক পেজের লিঙ্ক:
https://www.facebook.com/khaskhobor2020/
অমৃতের কুম্ভ থেকে এই মেলার নামকরণ। পুরাণ মতে, সমুদ্র মন্থন শেষে অসুরদের অমৃত দিতে রাজি ছিলেন না দেবতারা। ইন্দ্রপুত্র জয়ন্ত তাই অমৃতের কুম্ভ নিয়ে পলায়ন করেন। দেখে পিছু নেন অসুরেরা। অনেকটা ছুটে আসায় ক্লান্ত জয়ন্ত হরিদ্বারে অমৃতকুম্ভ মাটিতে নামিয়ে রেখে একটু বিশ্রাম নিচ্ছিলেন। এমন সময় চলে আসে অসুরবাহিনী। অগত্যা ফের উঠে পালাতে হয় জয়ন্তকে।
এরপর তিনদিন অন্তর যথাক্রমে প্রয়াগ, নাসিক এবং উজ্জয়িনীতে এভাবেই কুম্ভ মাটিতে নামিয়ে বিশ্রাম করে মোট ১২ দিন পর তিনি পুনরায় ফিরে আসেন ক্ষীরোদ সাগরের তীরে। চার জায়গার মাটিতেই কয়েক ফোঁটা করে অমৃত পড়েছিল। দেবতাদের এক দিন মানুষের এক বছরের সমান। সেই হিসেবেই ১২ বছর অন্তর একটি করে পূর্ণকুম্ভ পালিত হয় এই চার স্থানে। তবে প্রয়াগে ১৪৪ বছর অন্তর আসে একটি করে মহাকুম্ভ।