বিশ্বদীপ ব্যানার্জি: ১৯ নভেম্বর ২০২৩। ৭ মাস ১০ দিন আগের দগদগে ঘা কি মাত্র এক রাতেই শুকিয়ে যাবে? নাঃ জীবন মোটেই সকলকে দ্বিতীয় সুযোগটা দেয় না। কেউ কেউ তো একটা সুযোগই পায় না। কিন্তু তারপরেও তো কবি বলেছেন, “একবার না পারিলে দেখ শতবার…”
আরও পড়ুনঃ টি-২০ বিশ্বকাপ চলাকালীন রাজারহাটের দরিদ্র ঘরের মেয়ের সব দায়িত্ব নিল যুবরাজের সংস্থা
যুদ্ধে হেরে গুহায় আশ্রয় নেওয়া রবার্ট ব্রুস মাকড়সাকে দেখে যুদ্ধ জেতার অনুপ্রেরণা পেয়েছিলেন। কিন্তু রবার্ট ব্রুস বা সেই মাকড়সা হওয়ার সৌভাগ্য সকলের হয় না। কিন্তু রোহিত শর্মা পাচ্ছেন। ১৯ নভেম্বর, ২০২৩ থেকে ২৯ জুন, ২০২৪। মাত্র ৭ মাসের ব্যবধানেই পাচ্ছেন। তবু মনে রাখতে হবে, বিশ্বকাপ আর যাই হোক, ছেলের হাতের মোয়া কিন্তু নয়।
গত এক দশকে ভারত যে যেভাবে নক আউটে চোক করেছে, তাতে এ কথা না বলে কোনও উপায় নেই। উক্ত সময়ে মোট ৫টি ফাইনাল হেরেছে টিম ইন্ডিয়া। এই মুহূর্তে সবথেকে চমকপ্রদ ব্যাপার হল, শুরুটা এক টি-টোয়েন্টি ফাইনাল দিয়েই হয়েছিল ২০১৪ সালে। এরপর তালিকায় যোগ হয়েছে ২০১৭ চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি ফাইনাল, ২০২১ টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ ফাইনাল, ২০২৩ টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ ফাইনাল এবং ২০২৩ বিশ্বকাপ ফাইনাল। আরও গুরুত্বপূর্ণ যেটা, প্রতিটি ম্যাচেই ভারতের হয়ে ওপেন করতে নেমেছিলেন রোহিত গুরুনাথ শর্মা।
কেউ যদি বারবার শেষ মুহূর্তে এসে এভাবে খেই হারিয়ে ফেলে তাহলে বুঝতে হবে স্কিলে নয়, সমস্যাটা মানসিক। এমনটা মোটেই নয় যে, তার কোয়ালিটি নেই। এর একমাত্র কারণই হল, মোক্ষম সময়ে স্নায়ুকে নিজের বশে না রাখতে পারা। অনেক তো হল, এবারে সেটা পারবেন তো হিটম্যান?
তাঁর নিজের বিশ্বাস, পারবেন। আর সেজন্যই বছরের শুরুতেই ঘোষণা করে দিয়েছিলেন যে, তাঁরা আরও একবার বিশ্বকাপ জেতার পূর্ণ চেষ্টা করবেন। সেই চেষ্টাতেই আরও একটা ফাইনালে পৌঁছনো গিয়েছে। টুর্নামেন্ট থেকে ছুটি করে দেওয়া গিয়েছে অস্ট্রেলিয়া এবং ইংল্যান্ডের। এবার শুধু অন্তিম হাডল পেরোনো বাকি। সামনে সেই দক্ষিণ আফ্রিকা, বিশ্বমঞ্চে যাদের চোকিং ভারতের থেকেও বিখ্যাত। প্রথমবার বিশ্বকাপ ফাইনাল খেলছে তারা।
খাস খবর ফেসবুক পেজের লিংকঃ https://www.facebook.com/share/utMoUiiv31FCHMCN/?mibextid=qi2Omg
কিন্তু ভারত অধিনায়ক কি আদৌও প্রতিপক্ষকে নিয়ে ভাবছেন? চাল-ডাল নয়— বিরিয়ানি রান্নার মালমশলা নিয়েই তিনি বিরিয়ানি রাঁধতে বসেছেন ক্যারিবিয়ান দ্বীপপুঞ্জে। তবু কি মনে কোথাও গিয়ে খচখচ করছে না, গত ১০ বছরের পরিসংখ্যান? ২৮ জুনের রাতে রোহিত শর্মার ঘুম আসবে কি না তা বলা মুশকিল। কিন্তু এটা নিশ্চিতভাবেই বলে দেওয়া যায় যে সারাটা দিন ধরে মানুষটা শুধু ভেবে গিয়েছেন। তাঁর অন্তরাত্মা তাঁকে কি আর বলছে না— জীবন সকলকে দ্বিতীয় সুযোগ দেয় না, রোহিত?