বিশ্বদীপ ব্যানার্জি: গত ২৯ জুন বার্বাডোজের মাটিতে দক্ষিণ আফ্রিকাকে হারিয়ে দ্বিতীয়বার টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ জিতেছে ভারত। দিনটা ছিল শনিবার। দুই সপ্তাহ ঘুরে আরও একটা শনিবার হাজির। আর সেইসঙ্গে আরও একটা ফাইনাল। কিন্তু এজবাস্টনের এই ফাইনালে (WCL Final) ২৯ জুনের বার্বাডোজ নয়। ফিরে আসছে ১৭ বছর আগের জো’বার্গ।
আরও পড়ুনঃ টপকানো হল না ওয়ার্নকে, তিন নম্বরে থেকে ক্রিকেটকে আলবিদা জিমির
অধিনায়ক যুবরাজের ব্যাটিং তাণ্ডবে শুক্রবার নর্দাম্পটনে অস্ট্রেলিয়াকে সেমিফাইনালে হারিয়ে শনিবারের ফাইনালে পাকিস্তান চ্যাম্পিয়ন্সের মুখোমুখি ইন্ডিয়া চ্যাম্পিয়ন্স। সবটা চলেছে যেন ২০০৭ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের স্ক্রিপ্টটাকে সামনে রেখেই। সেবারেও যুবির ৩০ বলে ৭০ রানের ইনিংসে ভর করে অজিদেরই সেমিতে হারিয়ে চিরশত্রুদের বিরুদ্ধে ফাইনাল খেলেন ধোনিরা। আরও মজার কথা, সেবারই ছিল প্রথম টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ। আর এক্ষেত্রে এটাই ওয়ার্ল্ড চ্যাম্পিয়নশিপ অব লেজেন্ডসের (WCL) প্রথম মরশুম।
তাহলে কি ২০০৭ সালের ২৪ সেপ্টেম্বর জোহানেসবার্গের বুকে ভারতের প্রথম টি-২০ বিশ্বজয়ও ফিরে আসতে চলেছে শনিবারের বার্মিংহামে? এখানেও একটা মজার কথা। ২০০৭ টি-২০ বিশ্বকাপজয়ী ভারতীয় দলের যতজন সদস্য লেজেন্ডস লিগের (WCL) ইন্ডিয়া চ্যাম্পিয়ন্স দলে রয়েছেন, দেখা যাচ্ছে, পাকিস্তানের ক্ষেত্রে সংখ্যাটা তার থেকে বেশি। ২০০৭ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের পাক দলের মোট ৮ জন চলতি বুড়োদের বিশ্বকাপে রয়েছেন। যথাক্রমে ইউনিস খান, মিসবাহ উল হক, কামরান আকমল, শোয়েব মালিক, শাহিদ আফ্রিদি, মহম্মদ হাফিজ, সোহেল তনভীর এবং ইয়াসির আরাফাত। অন্যদিকে বিশ্বজয়ী নায়কদের মধ্যে থেকে থাকছেন যুবরাজ সিং, রবিন উত্থাপ্পা, ইউসুফ পাঠান, ইরফান পাঠান, হরভজন সিং এবং আর পি সিং।
খাস খবর ফেসবুক পেজের লিংক: https://www.facebook.com/share/5eGwbh7XqkKR1mRr/?mibextid=qi2Omg
সব মিলিয়ে ইঙ্গিতটা কি ভারতের প্রথম টি-২০ বিশ্বজয়ের দিকেই নয়? ইঙ্গিত যাই হোক না কেন, চলতি লিগে পাকিস্তানের যা পারফরম্যান্স তাতে শনিবারের বার বেলায় পাশা উল্টে যাওয়ার সম্ভাবনাই বেশি। টি-২০ বিশ্বকাপে বাবর আজমরা মুখ থুবড়ে পড়ার পর ডব্লিউসিএলে (WCL) এক অবিশ্বাস্য ছন্দে দেখা যাচ্ছে ইউনিস খানের নেতৃত্বাধীন দলকে। লিগ পর্বে পাঁচটি ম্যাচের মধ্যে জয় ছিনিয়ে নিয়েছে চারটিতেই। বিশেষ করে, ভারতকে তারা যেভাবে নাস্তানাবুদ করেছে, তাতে ফাইনালে নামার একটু হলেও চাপে থাকবেন যুবরাজ-হরভজনরা। ভারতের বিরুদ্ধে দুই ওপেনারের ঝোড়ো ব্যাটিংয়ে ২০ ওভারে মাত্র ৪ উইকেট খুইয়ে ২৪৩ তুলেছিল পাকিস্তান চ্যাম্পিয়ন্স।
আসলে এই পাকিস্তান দলে শার্জিল খান, শোয়েব মাকসুদের মত কিছু ক্রিকেটার রয়েছেন যাঁরা এখনও নিয়মিত ক্রিকেট খেলেন বা কিছুদিন আগেও খেলেছেন। এই বিষয়টিও ফাইনালের আগে তাঁদের এগিয়ে রাখছে। অবশ্য গ্রুপ পর্বে নড়বড়ে দেখানো ভারতও শুক্রবার দ্বিতীয় সেমিফাইনালে ক্যাঙ্গারুদের বিরুদ্ধে ৮৬ রানের সুবিশাল জয় ছিনিয়ে নিয়েছে। সবথেকে বড় কথা, ছন্দে ফিরেছেন যুবরাজ সিং (২৮ বলে ৫৯)। এছাড়া রবিন উত্থাপ্পা এবং দুই পাঠানভাইও অর্ধশতরানের গণ্ডী পেরিয়েছেন। তাই ২০০৭ এর পুনরাবৃত্তি যদি ঘটেও তাতে আশ্চর্যের কিছু নেই। কে না জানে, ভারত-পাকিস্তান ম্যাচে লড়াইটা যত না ব্যাট-বলের তার থেকেও বেশি স্নায়ুর। সে প্রতিযোগিতা যাই হোক না কেন।