কলকাতা: শুধু ভোটে দাঁড়ালে হবে না, জেতার পর মানুষের কাজও করতে হবে৷ সেই কাজ করার মানসিকতা না থাকলে কাউন্সিলর হওয়ার দরকার নেই৷ গোয়া থেকে ফিরে কলকাতা পুরভোটের প্রচারে নেমে এভাবেই হুঁশিয়ারি দিলেন তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়৷
বুধবার বিকেলে ফুলবাগানের নির্বাচনী সভা থেকে মুখ্যমন্ত্রী দলীয় প্রার্থীদের উদ্দেশ্যে বলেন, ‘‘যাঁরা দাঁড়িয়েছেন তাঁদের জন্য বলছি- আমি বকার জন্য বলি না, সংশোধন করার জন্য বলি৷ আপনার ওয়ার্ডের গলিতে রাস্তা খারাপ থাকলে, আলো না জ্বললে সেটা কাউন্সিলর হিসেবে আপনাকেই দেখতে হবে৷ যে দায়িত্ব নিতে পারবেন না, তিনি ভোটে দাঁড়াবেন না৷’’
নাম না করে টেনে এনেছেন নিজের ওয়ার্ডের বিদায়ী কাউন্সিলর রতন মালাকারের প্রসঙ্গ৷ বলেছেন, ‘‘কিছুদিন আগে আমার নিজের ওয়ার্ড ৭৩ নম্বরে কিছু লোক আমার গাড়ি দাঁড় করিয়ে বলল, কলের পাইপটা খারাপ৷ কলের পাইপটাও আমি সারিয়ে দেব? তাহলে তুমি কাউন্সিলর থাকবে কেন?’’ জবাবও দিয়েছেন, ‘‘তাই এবারে ওকে (রতন মালাকার) আর টিকিট দিইনি৷’’
বেনিয়মের মৌচাকে ঢিল ছুঁড়েছেন, ‘‘তুমি কাউন্সিলর হবে, এলাকার মানুষ জল পাবে না, রাস্তায় আলো জ্বলবে না৷ সেটা তুমি দেখবে না৷ অথচ এলাকায় কে ঘর বাড়ি করবে, সেটা কাউন্সিলর ঠিক করবে, এটা হবে না৷ আস্তে আস্তে অনলাইনে যেতে হবে৷ কোনও বেনিয়ম বরদাস্ত করব না৷’’
এবারের ভোটে বহু পুরনো কাউন্সিলরকে যেমন টিকিট দেওয়া হয়নি তেমনি বহু নতুন মুখকেও প্রার্থী তালিকায় ঠাঁয় দিয়েছে তৃণমূল৷ সেই প্রসঙ্গ টেনে তৃণমূল নেত্রী প্রকাশ্যেই রীতিমতো পাঠ নিয়েছেন কাউন্সিলরদের৷ বলেছেন, ‘‘এমপি, এমএলএ-রা সব কাজ করতে পারেন না৷ ওয়ার্ডের কাজ করতে হবে স্থানীয় কাউন্সিলরকেই৷ মানুষের সেবা করার মানসিকতা রাখতে হবে৷ তা না হলে মানুষের কাজ করা সম্ভব নয়৷’’
উন্নয়নের প্রশ্নে রীতিমতো সওয়াল করে নেত্রী বলেছেন, ‘‘আজ কলকাতায় কি হয়নি? জল কর দিতে হয় না৷ দিল্লিতে জলকর দিতে হয়৷ রান্না করবেন না কাপড় কাচবেন? আমাদের এখানে বিনা পয়সায় রেশন, স্বাস্থ্য পরিষেবা মেলে৷’’ জানতে চেয়েছেন, ‘‘আগের কলকাতার চেয়ে এখনকার কলকাতার ইমপ্রুভ হয়েছে কি হয়নি?’’ ফুলবাগানের সভা থেকে সমস্বরে জনতা সম্মতি জানিয়েছেন৷
সদ্য বর্ষায় ভেসেছিল কলকাতা৷ সেই প্রসঙ্গ টেনে এনে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘গত ১০০ বছরে এত বর্ষা হয়নি৷ একই বছরে আমফান, ফনীস ইয়াস কোনও কিছুর বাকি নেই৷ তবু আমরা চেষ্টা করে যাচ্ছি৷ আগামী দিনে কলকাতাকে আরও উন্নত করে তোলা হবে৷’’
টেনে এনেছেন করোনা সংক্রমণের প্রসঙ্গও৷ টিকা নিতে অনেকের মধ্যেই রয়েছে অনীহা৷ নেত্রীর কথায় তা স্পষ্ট, ‘‘যারা একটা করে ভ্যাকসিন নিয়েছেন তাঁরা দয়া করে স্বাস্থ্য কেন্দ্রে যান৷ দ্বিতীয় ভ্যাকসিনটা নিয়ে আসুন৷’’ মনে করিয়ে দিয়েছেন, ‘‘সতর্ক থাকবেন, মশার কামড় থেকে বাঁচতে হবে৷’’
আরও পড়ুন: গদ্দার, মীরজাফর Suvendu Adhikari-র দলবদলের বর্ষপূর্তিতে কাঁথিতে বিশেষ অনুষ্ঠান তৃণমূলের