লো প্রোফাইলই তাঁকে খ্যাতির শীর্ষে পৌঁছে দিয়েছে, ফের প্রমাণ রাখলেন দিদি

0
50

নয়াদিল্লি: আপনারে বড় বলে বড় সেই নয়, লোকে যারে বড় বলে বড় সেই হয়! বহুল ব্যবহারে জীর্ণ এই প্রবাদ প্রবচনটাই ফের প্রমাণ করলেন তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়৷

আরও পড়ুন: জালে উঠল দেড় কুইন্ট্যালের সামুদ্রিক কই, রাতারাতি সেলিব্রিটি অশোক

- Advertisement -

সোমবার সন্ধ্যায় দিল্লিতে পা রাখা ইস্তক তাঁকে ঘিরে রয়েছে তামাম মিডিয়া৷ দিদির প্রতিটি পদক্ষেপের দিকে নজর রাখছেন রাজনীতিকরাও৷ ক্রমেই সর্বভারতীয় রাজনীতিতে বিজেপি বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলিকে একত্রিত করার নেত্রী হিসেবে উঠে আসছে তাঁর নাম৷ কারণ, ঢেঁকির স্বর্গে গিয়েও ধান ভাঙার স্টাইলে সময় থাকতেই ২৪ এর বিজেপি বিরোধী জোটের ঐক্য মঞ্চকে শক্তিশালী করার প্রক্রিয়া শুরু করে দিয়েছেন বাংলার দিদি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়৷ তারই অঙ্গ হিসেবে বুধবার দিল্লির জনপথ রোডে সনিয়া গান্ধীর বাসভবনে দীর্ঘক্ষণ বৈঠক করলেন৷

আরও পড়ুন:  আসেনি রেজাল্ট, স্কুল বিল্ডিংয়ের ছাদ থেকে আত্মহত্যার হুমকি পাঁচ ছাত্রের

বৈঠকে হাজির ছিলেন সনিয়া তনয় রাহুলও৷ বৈঠক শেষে বিজেপি বিরোধী জোট প্রসঙ্গে মন্তব্যও করলেন৷ বললেন, ‘‘খুবই ইতিবাচক বৈঠক৷’’ তাহলে কি আপনি আগামীদিনে হতে চলেছেন বিরোধী জোটের নেত্রী? বিচক্ষণ রাজনীতিক মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সাবধানী প্রতিক্রিয়া, ‘‘আমি একা কিছু পারব না৷ দেশকে বাঁচাতে হলে বিজেপিকে হারাতে হবে৷ আর সেজন্য সকলকে একত্রিত হওয়া জরুরি৷’’ এরপরই তাচ্ছিল্যের সুরে বোমা ফাটিয়েছেন, ‘‘আমি থোরাই লিডার, আমি তো ক্যাডার।”

আরও পড়ুন:  রাহুলদের বৈঠকে গরহাজির তৃণমূল, প্রশ্ন বিরোধী ঐক্য নিয়ে 

রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা বলছেন, মমতা আবেগপ্রবণ৷ আবেগ তাড়িত হয়ে বহু সময় বহু আলপটকা মন্তব্যও করে থাকেন৷ কিন্তু আবেগতাড়িত হওয়া মমতার একটা দিক হলে অপরদিকটা অবশ্যই লো-প্রোফাইল মেনটেন করে চলা৷ শুধু পায়ে হাওয়ায় চপ্পল বা পরণে নীল-সাদা শাড়ি নয়, দিদি মননের দিক থেকেও অতি সাধারণ জীবন যাপনে অভ্যস্ত৷ তা না হলে কংগ্রেসের শীর্ষ নেতৃত্বর সঙ্গে জোট নিয়ে চূড়ান্ত সাফল্যের বৈঠক সেরে বেরানোর পরও কোনও মুখ্যমন্ত্রী নিজেকে এভাবে অ্যাড্রেস করতে পারেন না৷

একুশের বঙ্গ ভোট প্রচারের কথা মনে করিয়ে দিয়ে ওই মহল জানাচ্ছে, জনতার সামনে দলের কথা বলতে গিয়ে নেত্রী বরাবরই নিজেকে তুলে ধরেছেন, ‘‘আমি তৃণমূলের একজন সাধারণ কর্মী৷’’ জনতার সঙ্গে নিজের বিভেদ ঘোচাতে বরাবরই মমতা-সুলভ ভঙ্গিমায় শোনা গিয়েছে, ‘‘কর্মীরাই দলটাকে টিকিয়ে রাখে৷ তাই বাংলার মা, বোন, ভাই, দাদাদের প্রণাম৷ আপনারা আছেন বলেই তৃণমূল আছে৷’’
রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, মমতার এই সহজ সাধারণ জীবন যাপন, আলপটকা মন্তব্য, শিশুসুলভ আচরণ- এগুলোকেই তাঁকে আর পাঁচটা রাজনীতিকের থেকে আলাদা করে চিনিয়ে দেয়৷ তাই বামেদের শক্ত ঘাঁটিতে আস্ত একটা দলের জন্ম দিয়ে, টানা ১৩ বছরের লড়াই সংগ্রামের পর সরকারে বসার ছাড়পত্র আদায় করে এবং মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে হ্যাটট্রিক করার পরও মমতাই একমাত্র অনায়াসে বলতে পারেন, ‘‘‘‘আমি থোরাই লিডার, আমি তো ক্যাডার।”